রবিবার, ০১ Jun ২০২৫, ১১:০৮ অপরাহ্ন
শাহরিয়ার কবির আকন্দ- গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধিঃ গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলার অনেকেই ভারমি কম্পোষ্ট সার ও ট্রাইকো কম্পোষ্ট সার তৈরী করে সফলতা দেখিয়েছেন।
তার মধ্যে মহদীপুর ইউনিয়নের বুজরুক বিষ্ণুপুর গ্রামের সাজু মিয়া অন্যতম। মহদীপুর ইউনিয়নের কেত্তার পাড়া দোকানঘর কৃষি কালেশন পয়েন্টের পরিচালক রফিকুল ইসলামের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন জেলা উপজেলায় এসব উন্নয়তমানের ভারমি কম্পোষ্ট, ট্রাইকো কম্পোষ্ট সার তৈরি ও বিক্রি করা হয়।
এতে করে এলাকার অনেক দরিদ্র পরিবার স্বাচ্ছন্দ্যে জীবিকা নির্বাহ করছেন। ২০০৮ইং সাল থেকে শুরু করা এসব কম্পোষ্ট সার তৈরীতে প্রশিক্ষণ দিয়ে এলাকার নারী পুরুষদের একাজে উৎসাহিত করতে সহযোগিতা করেন উপজেলা সেবাদানকারী সমবায় সমিতি লিমিটেডর সাধারণ সম্পাদক ও কৃষি কালেশন পয়েন্টের পরিচালক রফিকুল ইসলাম।
তিনি প্রতি কেজি কোম্পোষ্ট সার ৭ টাকা দরে কিনে নিয়ে তা বিক্রি করেন দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলায়।
কেত্তারপাড়া কৃষি কালেকশন পয়েন্টর পরিচালক রফিকুল ইসলাম জানান- আমার এ কৃষি কালেশন পয়েন্ট থেকে কম্পোষ্ট সার ট্রাক যোগে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে দেড় থেকে ২’শ টন বিক্রি হয়। বিশেষ করে বাগান মালিকেরা ও নিরাপদ সবজি চাষীরা এসব সার বেশি নেন। এতে করে আমার মাসে ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা ইনকাম হয়।
ভারমি কম্পোষ্ট তৈরি করে সংসারে সচ্ছলতা এনেছেন মহদীপুর ইউনিয়নের গোয়াল পাড়া গ্রামের নারী উদ্যোক্তা কোহিনুর বেগম।তিনি বলেন- আমার স্বামী এক যুগ আগে মারা গিয়েছে।
আমি প্রথমে রফিকুল ভাইয়ের মাধ্যমে ঔষুধি গাছ ও ভারমি কম্পোষ্ট সার তৈরির প্রশিক্ষণ গ্রহণ করি। এসব কম্পোষ্ট সার রফিকুল ভাইয়ের মাধ্যমে ২’শ ৮০ টাকা মন দরে এক টন বিক্রি করি। এতে করে খরচ বাদ দিয়ে আমার ভালোই লাভ হয়।
একই ইউনিয়নের বুজরুক বিষ্ণুপুরের ট্রাইকো কম্পোষ্ট তৈরী করেন সাজু মিয়া।তিনি জানান- আমার একটি সেড থেকে ১৬ টন কম্পোষ্ট তৈরী হয়। এতে আমার খরচ বাদ দিয়ে একটি সেড থেকে ৩০ হাজার টাকা লাভ হয়। একটা সেডে কম্পোষ্ট সার তৈরীতে সময় লাগে তিন মাস।
এগুলো তৈরী করতে অর্ধেক গোবর, চার ভাগের এক ভাগ কচুরি পানা, নিম পাতা ৬ ভাগের একভাগ,শুকনা খড় টনে ২০ কেজি, ট্রাইকোডার্মা পাউডার টনে ২ কেজি, কাঠের ভূষি লাগে টনে ৫০ কেজি আর আনুষঙ্গিক কিছু দিয়ে এ সার তৈরী করা হয়।
কৃষকেরা জানান- তাদের উৎপাদিত ভারমি কম্পোষ্ট ও ট্রাইকো কম্পোষ্ট সার জমিতে প্রয়োগ করে আমরা ভালো ফলন পেয়েছি। খরচও কম। পরিবেশের কোন ক্ষতি করেনা। পোকামাকড়ের উপদ্রুপ কম হয়।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ফাতেমা কাওসার মিশু জানান- কোম্পোষ্ট সার পরিবেশবান্ধব ও উচ্চ ফলনশীল একটি সার। এটি মাটির উর্বরতা বৃদ্ধি করে কৃষকের অর্থের সাশ্রয় হয় এবং বিষমুক্ত ফসল পাওয়া যায়। যেটি মানব দেহের জন্য অত্যন্ত উপকারী।